ভাষাওসংস্কৃতি
ভাষা:
জনবৈচিত্র্যরএকঅনন্যমিলনক্ষেত্ররাঙ্গামাটিপার্বত্যজেলার রাজস্থলী উপজেলা।এখানে৮ ভাষাভাষিআটটিজাতিসত্ত্বারবসবাসরয়েছে।এরাহচ্ছেমারমা, তঞ্চঙ্গ্যা, ত্রিপুরা, বাঙ্গালী, খিয়াং, মুরুং রাখাইন ও চাকমা।ভাষাওসংস্কৃতিরবিচারেএকজাতিসত্ত্বাঅন্যজাতিসত্ত্বাথেকেস্বতন্ত্র।নৃতাত্ত্বিকবিচারে বাঙ্গালী ছাড়াতাদেরসকলেইমঙ্গোলীয়জনগোষ্ঠিভুক্ত।সংখ্যাগরিষ্ঠতারদিকথেকে‘মারমা’হচ্ছেপ্রধানজাতিসত্ত্বা।তাদেরপরেইতঞ্চঙ্গ্যা, ত্রিপুরাও বাঙ্গালীদেরঅবস্থান।অন্যান্যচারটিজাতিসত্ত্বারসংখ্যাঅতিনগন্য।
এতদঞ্চলেবসবাসরতপ্রত্যেকজাতিসত্ত্বাররয়েছেনিজস্বভাষাওসংস্কৃতি।এদেরমধ্যে মারমাদেররয়েছেনিজস্ববর্ণমালা।মারমারাবর্মীবর্ণমালায়লেখারকাজচালায়।তাদেরলোকসাহিত্যওবেশসমৃদ্ধ।লোকসাহিত্যেরমধ্যেরয়েছেপ্রবাদ-প্রবচন(কাপ্যা), ধাঁধাঁ(পাইং হ্রো), লোককাহিনী, ছড়াজাই পাংখুংইত্যাদি।এগুলোরব্যবহারও রচনাশৈলীবেশচমকপ্রদ।লোককাহিনীরবুননেওউৎকর্ষতারছাপরয়েছে।মারমা, তঞ্চঙ্গ্যা, খিয়াংওত্রিপুরারাআধুনিকসাহিত্যচর্চায়ওঅনেকটাএগিয়েছে।তারানিজেদের ভাষায়কবিতা, গল্প, প্রবন্ধইত্যাদিরচনাকরছে।
মারমারাবর্মীভাষায়কথাবলে।মারমাভাষাতিববতী-বর্মীভাষারদলভুক্ত। চাকমাওতঞ্চঙ্গ্যাদেরভাষাসমগোত্রেরএবংভাষারীতিতেবেশমিলরয়েছে।দু’টোভাষায় Indo-Aryan বাহিন্দ-আর্যশাখারঅন্তর্ভূক্ত।ত্রিপুরাভাষাকেভারতবর্ষে ‘ককবরক’ নামেঅভিহিতকরাহয়।এভাষা Sino-Tibetan গোত্রভূক্ত।অন্যদিকেখিয়াংভাষাকুকী-চীন(Kuki-Chin) দলেরঅন্তর্ভূক্ত।
নিম্নেকতিপয়বাংলাশব্দেরসাথেউপজাতীয়শব্দেরসংগ্রহতুলেধরাহলোঃ-
বাংলা |
এক |
সূর্য |
আকাশ |
পাহাড় |
নদী |
পৃথিবী |
মানুষ |
চোখ |
গরু |
ভাত |
মারমা |
তই |
নিং |
গংখাং |
তং |
খ্যং |
গাবা |
লু |
ম্যাকচি |
নোওয়া |
থামাং |
তঞ্চঙ্গ্যা |
এক |
বেল |
আঘাচ |
মুরা |
গাঙ |
পিত্থিমী |
মানুচ |
চোক |
গরু |
ভাত |
ত্রিপুরা |
সা |
সাল |
নগা |
হাপং/হাচৌ |
তইমা |
হা |
বরক |
- |
মুসুক |
মাই |
খিয়াং |
হাত |
নী |
হন |
- |
হলং |
লুদুল |
খ্রং |
মিক |
সেল |
বু |
চাকমা |
এক |
বেল |
আঘাচ |
মুর |
গাং |
পিত্থিমী |
মানুচ |
চোক |
গরু |
ভাত |
সংস্কৃতি:
এতদঞ্চলের আদিবাসীসংস্কৃতিঅত্যন্তউজ্জ্বলএবংবৈচিত্রময়।এখানকার৮টিজাতিসত্তারবিশালসংস্কৃতিরভান্ডাররয়েছে। তারাপূর্বপুরুষদেরসংস্কৃতিরধারা পরমমমতায়যুগযুগধরেরক্ষাকরেচলেছে।আধুনিকশিক্ষা, মোঘল-ইংরেজ-বাঙালি সংস্কৃতিরছোঁয়া, নগরায়নওআকাশসংস্কৃতিআদিবাসীদেরসাংস্কৃতিকপরিমন্ডলকে যথেষ্টপ্রভাবিতকরেছেতাঠিক।এতেতাদেরভাষা, পোশাক, আহারওজীবনধারায় পরিবর্তনওলক্ষনীয়।তাসত্ত্বেওসংস্কৃতিরবিচারেতাদেরএখনোআলাদাভাবে চেনাসম্ভব।এধারাআরোঅনেকদিনঅব্যাহতথাকবেতানির্দ্বিধায়বলাযায়।
পার্বত্য আদিবাসীজনগোষ্ঠিরমধ্যেবৌদ্ধ, সনাতন, খ্রিস্টানওক্রামাধর্মপ্রচলিত। এখানেআচারসংস্কারবিষয়েবেশকিছুটোটেমিকধারণাপ্রতিষ্ঠিত।মন্দিরের পুরহিতদেরপাশাপাশিপাহাড়িওঝা, বৈদ্যওতান্ত্রিকদেরপ্রভাবওলক্ষকরা যায়।সমাজেপ্রতিষ্ঠিতপ্রাচীনরীতিনীতিমেনেচলেসবাই।লোকসংস্কারওলোকবিশ্বাসকেমনেপ্রাণেধারণকরেসেটাথেকেশুভ-অশুভকেবিচারকরাহয়কখনও কখনও।তবেবর্তমানেকুসংস্কারগুলোধীরেধীরেকমেযাচ্ছে।
পোশাক-পরিচ্ছদওঅলংকারব্যবহারেরক্ষেত্রেরাজস্থলী উপজেলারআদিবাসীদেরশিল্পমননশীলতারপরিচয় মেলে।মারমাদেরলুঙ্গি-থামি, তঞ্চঙ্গ্যাদেরপিনন-খাদি, ত্রিপুরাদেররিনাই-রিসাউৎকৃষ্টশিল্পকলারপরিচয়বহনকরে।সুদূরঅতীতেমেয়েদেরশুধুরূপারগহনাপরতেদেখাযেত।আবারকেউ কেউপুঁতিরমালাকিংবামুদ্রারমালা পরতো।কানেপরতোদুলআরঝুমকো।পুরুষরাপরতোমালকোচাধুতিএবংলম্বাহাতাজামা।বর্তমানেপেশাক-পরিচ্ছদে বেশপরিবর্তনএসেছে।এখনসকলজাতিসত্তারমেয়েদেরসালোয়ার-কামিজ, শাড়ি-ব্লাউজএবংপুরুষদেরপেন্ট-শার্টপরতেদেখাযায়।
মারমাদেরগীতি-নৃত্য-নাট্যবৌদ্ধধর্মীয়দর্শনেরছত্রছায়ায়গড়েউঠেছে। চাকমাওতঞ্চঙ্গ্যাদেরদু’টিজনপ্রিয়পালাগানেরনামহলো‘রাধামন-ধনপুদিপালা’ও‘চাদিগাংছারাপালা’।যুবক-যুবতীদেরমধ্যে‘উভগীদ’ সবচেয়েজনপ্রিয়।অতীতে মুহুর্মুহুরেইঙেরমধ্যেসারারাতব্যাপীগেইংখুলিরপালাগানশোনাছিলনিত্যনৈমিত্তিকঘটনা।উভগীদগাওয়াহতোজুমে, কাজেরফাঁকেফাঁকে।ঘুমপাড়ানীগানের নামহচ্ছে‘অলিডাগনি’।ত্রিপুরাদেরলোকগীতিরনামহলো‘পুন্দাতান্নাই’বা‘জিজোকপুন্দা’।বর্তমানেউপজাতীয়ভাষায়আধুনিকগানরচিতহচ্ছে।গীতিকার হিসেবেখ্যাতিমানহয়েছেনথুইচপ্রু মারমা, ক্রাঞোহিৃ মারমা, উচহলা ভান্তে, সুরেন্দ্রলালত্রিপুরা, রনজিতকুমারদেওয়ান, সুগত চাকমা, ঈশ্বরচন্দ্রতঞ্চঙ্গ্যাপ্রমুখ।এউপজেলারসঙ্গীতজগতেযাদেরনাম উল্লেখযোগ্যউটিংটিং মারমা।এখানকারঐতিহ্যবাহীবাদ্যযন্ত্রেরমধ্যেরয়েছে‘ বেহালা’, ‘দুদুক’, ‘খেখ্রং’, ‘শিঙা’‘বাঁশি’‘ঢোল’ ইত্যাদি।বর্তমানেএসবযন্ত্রেরব্যবহারকদাচিতচোখেপড়ে।এসবেরজায়গাদখলকরেনিয়েছেকীবোর্ড, হারমোনিয়াম, তবলা, গীটারইত্যাদি।এখানকার পার্বত্য চট্টগ্রামেরপ্রধানসামাজিকউৎসব‘বিজু-সাংগ্রাই-বৈসুক’।মারমা, তঞ্চঙ্গ্যা,ত্রিপুরাওখিয়াংরাবর্ষবিদায়ওনববর্ষেরআগমণউপলক্ষেতিনদিনব্যাপীএ উৎসবপালনকরে।এবিষয়ে‘ঐতিহ্য’ নামককনটেন্টেবর্ণনাকরাহয়েছে। মারমাদের‘ ছোয়াইংদগ্রীলংপোয়েহ’ ও‘রথটানা’ উল্লেখযোগ্য।‘খিয়াংআদিবাসীদেরপ্রধান উৎসব‘বড়দিন’।মুরুংদের রয়েছে‘গো-হত্যা’উৎসব।বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের বর্তমানে‘কঠিনচীবরদান’প্রধানধর্মীয়উৎসবে পরিণতহয়েছে। ত্রিপুরাদের‘গরাইয়ানৃত্য’বৈসুকউৎসবেঅনুষ্ঠিতহয়।লুসাইদেরলোকনৃত্যেরমধ্যে‘বাঁশনৃত্য’ইতোমধ্যেজনপ্রিয়তালাভকরেছে।এতদঞ্চলেরনৃত্যশিল্পীরাদেশেকৃতিত্বপ্রদর্শনকরেছে।আদিবাসী নৃত্যশিল্পীদের‘জুমনৃত্য’, ‘গরাইয়ানৃত্য’, ‘বাঁশনৃত্য’ও‘বোতলনৃত্য’ জাতীয়ওআন্তর্জাতিকপরিমন্ডলেপ্রচুরপ্রশংসাকুড়িয়েছে।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস